অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা: সৌন্দর্যের আড়ালে পরিবেশের ক্ষতি

প্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা: সৌন্দর্যের আড়ালে পরিবেশের ক্ষতি

উৎসব আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আমাদের আনন্দ দেয় এবং সমাজে একতা তৈরি করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শহর, গ্রাম, মহল্লা বা রিসোর্টে বিভিন্ন উদযাপন উপলক্ষে যে অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা করা হচ্ছে, তা পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

অতিরিক্ত আলোকসজ্জার সমস্যা

বিয়ের অনুষ্ঠান, ধর্মীয় উৎসব, বা স্থানীয় উদযাপনে পুরো এলাকাজুড়ে অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই আলোকসজ্জা সাময়িক সৌন্দর্য আনলেও এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং বিদ্যুতের বিশাল অপচয় ঘটায়।

পরিবেশের ওপর প্রভাব

অতিরিক্ত আলোকসজ্জা পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করে, বিশেষত আলো দূষণ (light pollution)। এটি রাতে প্রাণীদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। পাখি ও পতঙ্গ, যারা রাতের পরিবেশে অভ্যস্ত, তারা আলোর কারণে বিভ্রান্ত হয়। এর ফলে তাদের খাদ্য সংগ্রহ, প্রজনন, এবং মাইগ্রেশনে সমস্যার সৃষ্টি হয়।

অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ব্যয়

অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা শুধুমাত্র পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, এটি অর্থনৈতিকভাবেও একটি বোঝা। একেকটি অনুষ্ঠানের জন্য আলোকসজ্জার পেছনে যে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়, তা আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। এটি আমাদের মধ্যে অপচয়ের একটি প্রবণতা তৈরি করে।

সমাধানের উপায়

আমাদের উদযাপনকে আরও সচেতন এবং পরিবেশবান্ধব করার জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো নিতে পারি:

  1. এনার্জি-এফিশিয়েন্ট লাইটিং ব্যবহার: এলইডি লাইট ব্যবহার করুন, যা কম বিদ্যুৎ খরচ করে।
  2. সীমিত আলোকসজ্জা: পুরো এলাকা আলোকিত করার বদলে নির্দিষ্ট স্থান আলোকিত করুন।
  3. সচেতনতা বৃদ্ধি: আলো দূষণের প্রভাব নিয়ে আলোচনা শুরু করুন এবং সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করুন।
  4. বিকল্প উদযাপন: গাছ লাগানো, দান-খয়রাত, বা অন্য কোনো সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে উদযাপন করতে পারেন।

শেষ কথা

উৎসব উদযাপন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা পরিবেশ বা সম্পদের অপচয়ের কারণ হওয়া উচিত নয়। অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা বন্ধ করে আমরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারি এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।





#অপচয়_রোধ_করি

No comments:

Post a Comment

আহলান সাহলান মাহে রমাদান

সকলকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।